যশোর প্রতিনিধি : যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া সম্মিলনী মহিলা আলিম মাদরাসা খন্ডকালীন শিক্ষক ঝিকরগাছা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের সোলাইমানের ছেলে মাহাবুবুর জামান প্রতারণার মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ দাবি করেছেন। একই সাথে তিনি ভূয়া চুক্তিনামা উপস্থাপন করে মাদরাসার অধ্যক্ষের নিকট তিন কিস্তিতে ১৬ লাখ টাকা দাবি করেছেন। প্রতারণার ঘটনা স্বীকার না করায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। এঘটনায় মাদরাসার অধ্যক্ষ, যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে ফারুক হোসেন যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে মামলা করেছেন। মামলায় মাহাবুবুর জামান ছাড়াও আসামি করা হয়েছে, যশোর সদর উপজেলার মাহিদিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক সরদারের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও ডা. আমির হোসেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, সদর উপজেলার মাহিদিয়া সম্মিলনী মহিলা আলিম মাদরাসা হিসেবে স্বীকৃতি পেলে ফারুক হোসেন সুপার হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। ২০১২ সালের ১ জুন মাদরাসাটি কলেজিয়েট হিসেবে অনুমতি পেলে তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে অনুমতি পান। ২০১৬ সালে মাদরাসার প্রভাষক শারমিন আক্তার মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলে মাসিক ২০০০ টাকা চুক্তিতে সম্পূর্ণ অস্থায়ীভাবে মাহাবুবুর জামানকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে প্রভাষক শারমিন আক্তার যোগদান করলে মাহাবুবুর জামানকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। এরপর মাহাবুবুর জামানসহ অন্যান্য আসামিরা জাল নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র এবং ১৬ লাখ টাকার চুক্তিপত্র সৃষ্টি করেন।
মামলায় আরো উল্লেখ করা হয়, মাহাবুবুর রহমান অধ্যক্ষ ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেছেন। যার নম্বর ২৮৬/২০। ওই মামলায় ইতোপূর্বে সৃষ্ট একটি নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র এবং ১৬ লাখ টাকার চুক্তিনামা দাখিল করেছেন। দাখিলকৃত নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্রে প্যাডে মাদরাসার নাম আলিম মাদরাসার পরিবর্তে দাখিল মাদরাসা দেখানো হয়েছে। এছাড়া মাহাবুবুর জামান প্রভাষক বিজ্ঞান দেখানো হয়েছে। প্রকৃত পক্ষে তিনি মানবিক বিভাগের ছাত্র। আর দাখিল মাদরাসা হলে প্রভাষক পদের পরিবর্তে শিক্ষক হবে। এছাড়া ২০১৭ সালে ১৭ মে সম্পাদিত চুক্তিপত্রটি মাহিদিয়া সম্মিলনী আলিম মাদরাসা প্যাডে লিপিবদ্ধ। কিন্তু মাদরাসার নাম মাহিদিয়া সম্মিলনী মহিলা আলিম মাদরাসা। ফলে সর্বোতভাবে নিয়োগপত্র, যোগদানপত্র ও টাকার লেনদেনের চুক্তিপত্রটি জাল জালিয়াতের মাধ্যমে সৃষ্টি করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া সরকার ম্যানেজিং কমিটি কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ করে দিয়েছে ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর। অথচ মাহাবুবুর জামান তার নিয়োগ ও যোগদান পত্র দেখিয়েছেন ২০১৫ সালের ২১ ডিসেম্বর। ফলে নিয়োগ, যোগদান ও চুক্তিনামাটি মোটেও সঠিক নয়। জাল জালিয়াতির মাধ্যমে এসব তৈরি করে অধ্যক্ষের সাথে প্রতারণা করা হচ্ছে। যশোর সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে অধ্যক্ষ ফারুক হোসেনের দায়েরকৃত মামলা নম্বর ২৯৭/২০।
মামলার ব্যাপারে মাহাবুবুর জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মামলার বিষয়টি জেনেছেন বলে জানান। তবে জাল নিয়োগ, যোগদানপত্র ও টাকার লেনদেনের চুক্তিনামার ব্যাপারে তিনি অস্বীকার করেন।