করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ঘরে থেকে যা করবেন

মাধঘোপা নিউজ ডেক্স: করোনাভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিষেধক এখন হাতের নাগালে। তবুও করোনা রোগের প্রতিরোধ সম্পর্কে সবাইকে ধারণা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সুষম খাবার, ফুসফুসের এক্সারসাইজ, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ করে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমানো যায়।

উন্নত দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের শ্বাসকষ্ট কমাতে এবং বুকে জমে থাকা কফ বের করে তাদের সুস্থ করে তুলতে চেস্ট ফিজিওথেরাপি বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। চেস্ট ফিজিওথেরাপি স্বতন্ত্র চিকিৎসা ব্যবস্থা যেখানে শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে বুকের সমস্যা বা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা সমাধান করা যায়।

বুকে শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার আগে থেকেই অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল কমতে থাকে। তাই আগে থেকেই যদি আপনি বিষয়টার দিকে নজর রেখে ফিজিওথেরাপি শুরু করেন তাহলে এই হাহাকারের মধ্যে নাও পড়তে হতে পারে আপনাকে। মনে রাখবেন, এই সময় যখন বিপদে পড়বেন তখন প্যানিক করবেন না। এতে শ্বাসকষ্ট আরও বাড়বে।

বর্তমানে প্রতিষেধকের আকাল, চরম দামে বিক্রি হচ্ছে অক্সিজেন। একটা অক্সিজেনের সিলিন্ডার জোগাড় করে দিতে পারা মানেই আশার আলো দেখছেন রোগীর পরিবার। আপনাকে যাতে এমন অবস্থায় না পড়তে হয়, তার জন্য বাড়িতেই করুন চেষ্ট ফিজিওথেরাপি।

যাদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্যাট রয়েছে তাদের পেটের চর্বির জন্য ফুসফুসের নিচের অংশের কার্যক্ষমতা কমে যায়। তাই পেটের এক্সারসাইজ, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ (হাঁটাহাঁটি, জগিং, সিঁড়িতে ওঠানামা করা), স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, রেসিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ (ডাম্বেল অথবা থেরাব্যান্ড দিয়ে) করতে পারেন। এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়বে।

ব্রিদিং এক্সারসাইজ ভালো রাখবে ফুসফুস । হার্ট যেহেতু একটি মাংসপেশি তাই এটিকে সংকোচন ও প্রসারণের মাধ্যমেই ওষুধের পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। গবেষণা মতে, প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট (৬০% থেকে ৮৫% এর হৃদস্পন্দন) অ্যারোবিক এক্সারসাইজ, স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ, রেসিস্ট্যান্স এক্সারসাইজ ইত্যাদির মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

রোজ সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা হতে পারে চমৎকার এক্সারসাইজ। বয়স্ক রোগীরা (৫০-৮০ বছর) শারীরিক কাজকর্ম না করার ফলে রক্তে থাকা খারাপ হরমোন-কর্টিসল, পিএআই এর পরিমাণ বেড়ে গেলে রক্ত জমাট বাধার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। তখনই হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। অক্সিজেন সেচুরেশন রেট ৯২ বা ৯৩ থাকলে প্রোন পজিশনে থেকে ব্রিদিং এক্সারসাইজ করুন। অক্সিজেন রেট স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসবে। পানি খেয়ে নিন সেই সময়।

মাস্ক পরে সিঁড়ির ১০টি ধাপ ওঠানামা করতে পারেন দিনে ২-৩ বার। এতে ফুসফুস এবং হার্টে রক্ত সঞ্চালন ভালো থাকবে। নাক দিয়ে যে সময় ধরে শ্বাস নেবেন, মুখ দিয়ে তার চেয়ে বেশি সময় ধরে শ্বাস ছেড়ে দেবেন। ধরা যাক ১:২ সেকেন্ড। এভাবে রোগীর ফুসফুসের আয়তনও বাড়বে, মানসিক প্রশান্তি হবে এবং রোগী আরাম বোধ করবেন।