যশোরে সংঘবদ্ধ সোনা চোর সিন্ডিকেটকের নারী সহ আট সদস্য আটক

যশোর প্রতিনিধি: দুটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে জেলা গোয়েন্দা শাখা যশোরে অবস্থান নেয়া সংঘবদ্ধ একটি সোনা চোর সিন্ডিকেটকে শনাক্ত করেছে। মাসাধিক সময় তদন্ত করে আটক করা ওই চক্রের ৮ জনকে ২৫ মে দুটি চাঞ্চল্যকর মামলায় চালান দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৭জনই চুরির ঘটনা স্বীকার কেেরছে। এছাড়া একজন সংশ্লিষ্টতা স্বীকার না করায় তার রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে। এদিকে চোরাই সোনা বিকিকিনিতে যশোর শহরের ৪টি জুয়েলারী প্রতিষ্ঠান সরাসরি জড়িত বলে পরিস্কার করেছে ডিবি। এ ব্যাপারে আরো জোরালো অভিযান চলমান রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে থাকা আরো অনেককে খোঁজা হচ্ছে বলে দাবি জেলা গোয়েন্দা শাখা ওসির।

থানা সূত্রের দাবি, গত মার্চ ও এপ্রিল মাসে যশোর শহরের কাজীপাড়া বিমান বন্দর রোডের দুটি বাসায় স্বর্ণালংকার চুরির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়, যার নাম্বার ৭৯ ও ৮৯। মামলা দুটি তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় ডিবিকে। ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম মামলাটি তদন্তে নামেন। এক মেজরের বাসায় চুরি করতে গিয়ে আটকা পড়া যশোরের বেজপাড়ার আশিকুর রহমান বাপ্পি (২১) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই মামলায় হাজতে থাকা বাপ্পিকে ওই দুটি মামলায় আটক দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়। সে তথ্য দেয় যশোরে অবস্থান নেয়া চোর চক্রের বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে সোনা চোর চক্র ও এর সাথে জড়িতদের ব্যাপারে তথ্য পেয়ে ২৪ মে অভিযান পরিচলনা শুরু হয়। এদিন বিভিন্ন সময়ে শহরের খোকন জুয়েলার্স, বিশ^নাথ জুয়েলার্স, মা জুয়েলার্স ও রুমা জুয়েলার্সে অভিযান পরিচালনা করা হয় আটক বাপ্পিকে সাথে নিয়ে। এসময় চুরি যাওয়া ১৭ ভরি সোনা উদ্ধার করে ডিবির ওই টিম। আটক হয় গোপালগঞ্জের হরিদাশপুরের মজিবর রহমানের ছেলে মানিক সরদার, তার মা নাজমা বেগম, নড়াইল নড়াগাতির মাহাজনবাজারের হাসান শিকদারের স্ত্রী মিতা বেগম, কাশিয়ানী গোপালগঞ্জ বর্তমানে শংকরপুর জিরো পয়েন্ট মোড়ের আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী সালেহা বেগম, শংকরপুর চোপদার পাড়ার সেকেন্দার আলীর ছেলে আলমগীর হোসেন ঘোপ জেল রোড বেলতলার মৃত রইচ উদ্দিনের ছেলে আলমগীর কবির খোকন, নীলগঞ্জের মুন্নি বেগম ও মিন্টু নামে আরো একজন। সংঘবদ্ধ এই চক্রটি প্রায় ২০ ভরি স্বর্ণালংকার চুরি করে দুটি বাসা থেকে। এরপর তারা হাত বদল করে পরিবারের মহিলা সদস্যদের কাজে লাগিয়ে যশোর শহরের ৪ টি জুয়েলার্সে বিক্রি করে। তদন্ত কার্যক্রমের সময় পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে, কম মূল্যে জুয়েলারী মালিকগন ওই সোনা কেনেন। তারা চোরাই সোনা বিকিকিনিতে জড়িত। চোর চক্রটি শুধু সোনা নয় ল্যাপ্টপ, নগদ টাকাসহ ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী চুরি করে। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে সোনা চুরির বিষয়টি স্বীকার করার পর ২৫ মে তাদের আদালতে চালান দিলে ৭ জন চুরির সাথে সংশ্লিষ্টতার বিষয় স্বীকার করেছে। আসামিদের মধ্যে মিন্টু আদালতে স্বীকার করেনি।

এ ব্যাপারে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাশ জানিয়েছেন, আটককৃতরা অনেক তথ্য দিয়েছে। তারা আদালতেও সব স্বীকার করেছে। তদন্ত কর্মকর্তা আটককৃতদের সংশ্লিষ্টতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে প্রমান করতে পেরেছেন। অভিযান এখনও চলমান রয়েছে। এই সিন্ডিকেটে আরও অনেকে থাকতে পারে। চক্রের অন্যদেরও আটকে অভিযান অব্যাহত থাকবে।