খুলনা খালিশপুরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের অভ্যন্তরে নির্মিতব্য ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত ৮৫ চীনা নাগরিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে ১৯ জন নেগেটিভ সনদ লাভ করলেও। ৬৬ জনের এখনো করোনা পজিটিভ। গণমাধ্যমকে পাওয়ার প্লান্টের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক জাহিদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে রাইজিং বিডির খবওে প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি জানিয়েছেন, গত এক মাসে (১৮ এপ্রিল থেকে ১৮ মে) এ প্রকল্পে কর্মরত এই ৮৫ চীনা নাগরিকের করোনা শনাক্ত হয়। এদের মধ্যে নেগেটিভ হয়েছেন মাত্র ১৯ জন। আক্রান্তরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
খুলনা মেডিক্যাল কলেজের করোনা ল্যাব সূত্রে জানা গেছে, নির্মিতব্য পাওয়ার প্লান্টে কর্মরত ৯৭ জনের করোনা টেস্ট করার জন্য গত ১৬ মে নমুনা দেওয়া হয়। ১৮ মে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায় ৯৭ জনের মধ্যে ৪২ জনই করোনা পজিটিভ।
খুলনা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, এর আগে গত ২২ এপ্রিল প্রথম ১০ জন চীনা নাগরিকের করোনা টেস্ট করা হয়। এর মধ্যে ৮ জনের পজিটিভ আসে। কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসা জন্য ঢাকায় পাঠান। আক্রান্ত অন্য ৫ জনকে খুলনা বিদ্যুৎকেন্দ্রে আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সূত্র আরও জানায়, এই ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টে ১৮৫ জন চীনা নাগরিক কাজ করছেন। ২০১৮ সালে ৩৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ প্লান্টটির কাজ শুরু হয়। এই প্রকল্পে বাঙালি শ্রমিকের সংখ্যা ৫-৬ জন। এছাড়াও প্রতিদিন প্রায় ২শ’ শ্রমিক অস্থায়ীভাবে কাজ করার জন্য প্রবেশ করেন এবং রাতে বাড়িতে ফিরে যান। গত এক মাসে মোট ৮৫ জন চীনা নাগরিকের করোনা পজিটিভ হয়েছেন। এর মধ্যে শুধু ১৮ মে ৪২ জন করোনা পজিটিভ শনাক্ত হন। ফলে এই প্রজেক্টে কর্মরত সবার মধ্যে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি প্রবল হয়ে উঠছে।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, করোনা আক্রান্ত চীনা নাগরিকরা কোয়ারেন্টিন মানছেন না। তারা বাইরে ঘোরাফেরা ও কেনা-কাটা করছেন। অনেকেই নিয়মিত কাজে অংশ নিচ্ছেন। এতে এই প্রজেক্টে কর্মরত সকলের মাঝে যেমন করোনা ছড়িয়ে পড়তে পারে, তেমনি আশপাশের এলাকায় সংক্রমণ বাড়তে পারে। বিষয়টি নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে তবে, আক্রান্তদের বাইরে ঘোরাফেরার বিষয়টি অস্বীকার করে পাওয়ার প্লান্টের ডেপুটি প্রকল্প পরিচালক জাহিদ হোসেন বলেন, তারা বিদেশি নাগরিক, এমনিতেই স্থানীয়দের সঙ্গে তেমন মেলামেশা করেন না। এছাড়া আক্রান্ত কেউ কাজে অংশ নেয়নি। তারা ইতোমধ্যে সকলেই করোনা টিকা নিয়েছেন। এ বিষয়ে খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, বিদ্যুৎ প্রজেক্টে কর্মরত করোনা আক্রান্ত চীনারা হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন। এত সংখ্যক চীনা কেন করোনা আক্রান্ত হলো- বিষয়টি দেখার জন্য আইইডিসিআর’র খুলনা বিভাগীয় কো-অর্ডিনেটর তদন্তের জন্য সেখানে গিয়েছেন।