যশোর প্রতিনিধি: প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং নিশ্বর্ত মুক্তির দাবীতে মানববন্ধন করেছে যশোরে সাংবাদিকদের সাতটি সংগঠন একই দাবিতে সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবের সামনে মুজিব সড়কে সমাবেশ করে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো।
এসময় বক্তব্য দেন যশোর সংবাদপত্র পরিষদের সভাপতি একরাম-উদ-দ্দৌলা, প্রেসক্লাব সম্পাদক আহসান কবীর, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শেখ দিনু আহমেদ, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে জিয়াউল হক, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মনিরুজ্জামান মুনির প্রমুখ। এই কর্মসূচিতে অন্যদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, দৈনিক টেলিগ্রাম সম্পাদক বিনয়কৃষ্ণ মল্লিক, সংবাদপত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিন, লোকসমাজের নির্বাহী সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, প্রেসক্লাব যশোরের সহসভাপতি নূর ইসলাম ও আনোয়ারুল কবীর নান্টু, যুগ্ম-সম্পাদক সরোয়ার হোসেন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এইচ আর তুহিন, সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ গনি খাঁন রিমন ও সাজেদ রহমান, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাবেক সভাপতি শহিদ জয়, বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রকিবুল ইসলাম, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোর্শেদ আলম, টিভি জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব শিকদার খালিদ, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূর ইমাম বাবুল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গালিব হাসান পিল্টুসহ শতাধিক সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশ থেকে বলা হয়, সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের দুর্নীতি-অনিময় পত্রিকার পাতায় তুলে ধরায় অনুসন্ধানী সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম আক্রোশের শিকার হয়েছেন। ওই মন্ত্রণালয়ে শ’ শ’ কোটি টাকা দুর্নীতিতে অভিযুক্তরাই পরিকল্পিত ও বেআইনিভাবে রোজিনাকে ধরে হেনস্তার পর পুলিশে দিয়েছে। ঘটনার সাথে যুক্তদের শত শত কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়ার কাহিনি ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সয়লাব হয়ে গেছে।
সাংবাদিকনেতারা বলেন, যারা জনগণের টাকা চুরিতে অভিযুক্ত, তারা বহালতবিয়তে রয়েছেন। অথচ শুধু জাতির স্বার্থে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হয়রানি-হেনস্তা, হামলা-মামলার শিকার হচ্ছেন সংবাদকর্মী। এই অবস্থা মেনে নেওয়া যায় না।
পরে সাংবাদিকরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি শহরের কেন্দ্রস্থল দড়াটানা ঘুরে কালেক্টরেট চত্বরে গিয়ে ফের সমাবেশে মিলিত হয়। সেখানে বক্তব্য দেন প্রেসক্লাব সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সম্পাদক আহসান কবীর।
পরে সাংবাদিকদের একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে।
স্মারকলিপিতে ছয়টি দাবি তুলে ধরা হয়। সেগুলো হলো:
১. সিনিয়র সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে;
২. রোজিনার বিরুদ্ধে রুজু করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে;
৩. স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযুক্ত অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে;
৪. স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে;
৫. ‘অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট’ বাতিল করতে হবে;
৬. ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’-এর বিতর্কিত ধারাসমূহ বাতিল করতে হবে।
জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানের হাতে স্মারকলিপি দেওয়ার সময় প্রেসক্লাব সম্পাদক আহসান কবীর সাংবাদিকদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক জানান, তিনি স্মারকলিপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে দ্রুত পাঠিয়ে দেবেন।