‘মওদুদ বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী’-বক্তব্যের জবাবে যা বললেন প্রধানমন্ত্রী

প্রয়াত আইনজীবী ও রাজনীতি ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী ছিলেন—বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের এমন বক্তব্য ও মওদুদ আহমদের জীবনীতে লেখা ওই দাবির জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে যখন আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বন্দি করা হয়, তখন যে মামলা চলছিল, এখানে অবশ্য তার জীবনীতে (মওদুদ) লেখা আছে তিনি আইনজীবী ছিলেন। আসলে তিনি অ্যাপয়েনটেড আইনজীবী ছিলেন না। তিনি ড. কামাল হোসেন সাহেব এবং বঙ্গবন্ধুর পিএস মোহাম্মদ হানিফের সঙ্গেই ঘুরতেন। তিনি সেই গ্রুপের সঙ্গে সব সময় ছিলেন। বিশেষ করে ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামের সঙ্গে তার খুব ঘনিষ্ঠতা ছিল। দুজন সব সময় একসঙ্গেই চলতেন। আসলে তিনি কোনো অ্যাপয়েনটেড আইনজীবী ছিলেন না।’

বৃহস্পতিবার সংসদে শোকপ্রস্তাবের ওপর আলোচনায় বিএনপির এমপি হারুনুর রশিদ বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর আইনজীবী হিসেবে কাজ করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, আমার এখনও মনে আছে, যখন আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠক ডাকল, এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে আগরতলা মামলায় বন্দি অবস্থায় প্যারোলে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব হল, তখন আমার মা এ বিষয়ে কঠিন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন মামলা প্রত্যাহার করে মুক্ত মানুষ হিসেবে যেন তিনি যান। তিনি প্যারোলে যাবেন না। এই তথ্যটি আমি মায়ের কাছ থেকে নিয়ে আমার বাবাকে পৌঁছে দিয়েছিলাম।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে বন্দি করে রাখা হয়েছিল সেই ক্যান্টনমেন্টে ভেতরে… সেখানে আমাদের অনেক নেতা তখন উপস্থিত ছিলেন। তাজউদ্দীন আহমেদ, তোফাজ্জেল হোসেন মানিক মিয়া, আমীর উল ইসলাম, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদসহ আরও নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারা বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিলেন এবং সেটাই তারা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আমি যখন আমার মায়ের বার্তাটা পৌঁছে দিই, অবশ্য বঙ্গবন্ধু নিজেও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তাকে মুক্ত মানুষ না করলে তিনি যাবেন না।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে বলেন, মায়ের বার্তাটা পৌঁছে বাসায় ফিরে আসার পর দোতলার বারান্দায় একা একা দাঁড়িয়ে আছি। আমীর উল ইসলাম ও মওদুদ আমার কাছে আসেন।
আমীর উল ইসলাম সাহেবই একটা কথা বললেন— ‘তুমি কেমন মেয়ে যে তুমি চাও না তোমার বাবা কারাগার থেকে ফিরে আসুক’, ব্যারিস্টার মওদুদ তাতে সায় দিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম— আমার বাবা সম্মান নিয়েই ফিরে আসবেন। আপনারা এসব বিভ্রান্তি ছড়াবেন না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি (মওদুদ) মুখে যাই বলুক তার লেখাগুলোর মধ্যে অনেক অনেক কন্ট্রভার্সি নিজের আপন মনের মাধুরী মিশিয়েও লিখেছেন।